হিবাকুসা : বর্বরতার শিকার এক অধিবাসী
হিবাকুসা। এটি খাঁটি জাপানি শব্দ। যার অর্থ বিস্ফোরণে আক্রান্ত মানুষজন। যন্ত্রণা আর চোখের জলই যাদের একমাত্র অবলম্বন। মার্কিনি বর্বরতার নৃশংসতম ক্ষতচিহ্ন বহন করে চলেছেন এই হিবাকুসারা। হিরোশিমা-নাগাসাকির বীভৎসতার সময় থেকে পরবর্তী বংশ পরস্পরায়। কারা এই হিবাকুসা? যারা বোমা বিস্ফোরণস্থলের সামান্য কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে ছিলেন তারাই হিবাকুসা।হিবাকুসার সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে 'দি অ্যাটমিক বোম্ব সারভাইভারস রিলিফ' আইনে।
জাপানী আইনমতে হিবাকুসা তাদের বলা হয় যারা পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের দু'সপ্তাহের মধ্যে বিস্ফোরণস্থলের দু'কিলোমিটারের মধ্যে ছিলেন, যারা বিস্ফোরণ নিঃসৃত তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত এবং এই তিন অবস্থার মধ্যে থাকা গর্ভবতী মহিলারা। মার্চ, ২০০৫ এরা সংখ্যায় ছিলেন ২,৬৬,৫৯৮। এদের বড় অংশই ছিল জাপানের। কয়েক হাজার ছিল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কোরিয়া ও তার আশপাশের। তথ্যটি জাপান সরকারের। হিবাকুসারা পেয়ে থাকেন সরকারি সহায়তা। অনুদান হিসেবে কিছু অর্থ দেওয়া হয় প্রতি মাসে।
প্রতি বছর
বিস্ফোরণের বার্ষিকীতে স্মরণ করা হয় নিহতদের। প্রতি বছর বিগত বছরে নিহত হিবাকুসাদের
নাম লিখে দেওয়া হয় হিরোশিমা নাগাসাকির বুকে। মার্কিনি বোমার তেজস্ক্রিয়তায় ঝলসে
যাওয়া নিহতদের স্মৃতিফলকে। দীর্ঘ হয়ে ওঠা এই তালিকা হিবাকুসাদের মতোই বহন করে
চলেছে মার্কিনি 'সভ্যতা'র কুৎসিত ক্ষতচিহ্ন। উল্লেখ্য, আগস্ট ২০০৫-এ হিরোশিমায় নিহত 'হিবাকুসাদের সংখ্যা ছিল ২,৪২,৪৩৭ এবং নাগাসাকিতে ১,৩৭,৩৩৯।
হিবাকুসাদের
জবানবন্দিতে এভাবেই উঠে এসেছে হিরোশিমা মার্কিনি নারকীয় পরমাণু বিস্ফোরণের সে
দিনের কথা। হিবাকুসাদের এই নিদারুণ জীবন যন্ত্রণা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে
বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ-ধিক্কার ঘৃনায় পরিণত হয়ে চিরদিন দংশন করে চলবে মার্কিন বিবেককে।
কোন মন্তব্য নেই