Header Ads

পিসার হেলানো টাওয়ারের ইতিহাস এবং আশংকা

বিশ্বজুড়ে রয়েছে বিভিন্ন আশ্চর্য জনক বিষয়। যার মধ্যে একটি অংশ হচ্ছে অট্টালিকা বা টাওয়ার। এমনই একটি আশ্চর্যময় টাওয়ার বা ভবন হচ্ছে পিসার হেলানো টাওয়ার। পৃথিবীর পরম আশ্চর্যগুলোর মধ্যে পিসার হেলানো টাওয়ার অন্যতম। ১১৭৩ খ্রিস্টাব্দে এ ঐতিহ্যবাহী টাওয়ারটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ইতালিতে। অভিজ্ঞ স্থাপত্যকর্মী এবং শত শত শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে গড়ে উঠে আকাশচুম্বী এ টাওয়ার। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় এই যে, টাওয়ারটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর দেখা গেল টাওয়ারটি একদিকে একটু হেলে পড়েছে।

ভূমি থেকে শীর্ষ পর্যন্ত এ টাওয়ারটির নিচু দিক থেকে মোট উচ্চতা ১৮৩.২৭ ফুট বা ৫৫.৮৬ মিটার এবং উঁচু দিক থেকে মাটি থেকে শীর্ষ পর্যন্ত টাওয়ারটির মোট উচ্চতা ১৮৬.০২ ফুট বা ৫৬.৭০ মিটার। ৮ তলা বিশিষ্ঠ এই টাওয়ারটির মোট ওজন ১৪৫০০ মেট্রিক টন। অক্লান্ত পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় করে তৈরি করা এ টাওয়ারটি হেলে যাওয়ার পর সবাই ভাবলো যদি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে এই টাওয়ারটি তবে তাহবে বড় কেলেঙ্কারি।

আর তাই সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের ডেকে আনা হয় এর সম্পর্কে নিশ্চিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিচার-বিশ্লেষণ করার জন্য। মাপজোক ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেল যে, টাওয়ারটি খাড়াভাবে অবস্থান না করে লম্ব রেখা থেকে প্রায় ৫ মিটার সরে গেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বছরে ১.২৫ সে.মি. করে হেলতে হেলতে যেকোনো সময় বিপজ্জনক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। টাওয়ারটি কেন হেলতে হেলতে বিপদের চরম সীমায় পৌঁছাচ্ছে তা জানার জন্য বিশ্বের স্বনামধন্য সব স্থপতিদের ডাকা হয়। শুরু হয় আবার নতুন করে মাপজোক ও খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। দীর্ঘদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা বের করেন যে, পিসার টাওয়ারটির প্রায় ৫০ মিটার তলায় অবস্থান করছে পানির স্তর আর এর চাপেই টাওয়ারটি হেলে পড়েছে। তারা পরামর্শ দিলেন যে বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের সমতা রক্ষা করে টাওয়ারটির হেলে পড়ার প্রবণতা বন্ধ করা যেতে পারে। টাওয়ারটি তৈরির পর থেকে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানী ও গবেষকরা এটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য গবেষণা করে চলেছেন।

১৯৮২ সালে পিসার টাওয়ারটির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নতুন করে গবেষণা শুরু হয়েছিল। গবেষকদের মতে যদি ক্রমেই এভাবে টাওয়ারটি হেলে পড়তে থাকে এবং তৎপরতার সঙ্গে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা যায় তাহলে ২০২০-২০২৫ সালের মধ্যে টাওয়ারটি অবশ্যই ভূমিসাৎ হবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.