মানুষ কেন লম্বা আবার কেউ বেঁটে হয়?
সৃষ্টির সেরা
জীব মানুষ। এবং আমরাই সেই শ্রেষ্ঠ মানুষ জাতি। কিন্তু আমারা যারা মানুষ তারা
কিন্তু সকলেই এক মাপের হই না। পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ বসবাস করে কিন্তু সবার মাপ
একই নয়। কেই লম্বা, কেউ বেঁটে আবার কেউ
বিশাল দেহের অধিকারী। মানুষ এমনও হয়ে থাকে যে, কাউকে আমরা
বলি তালগাছ আবার কাউকে বলি বেটে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে মানুষ কেউ লম্বা আবার কেউ বেঁটে
হয় কেন? আসুন এ ব্যাপারে আমরা জানার চেষ্টা করি।
লম্বা বা বেঁটে হওয়া নির্ভর করে বংশগত বৈশিষ্ঠ্যের উপর, যা আসে বাবা ও মায়ের ক্রোমোজোম থেকে। বংশগত কারণ ছাড়াও গ্রোথ হরমোনের প্রভাব লম্বা বা বেঁটে হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। গ্রোথ হরমোন মস্তিস্কে অবস্থিত পিট্যুইটারি গ্রন্থি থেকে বের হয়। অস্থি তৈরি করতে ও লম্বা অস্থির দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এই হরমোন। অস্থি তৈরির কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই হরমোনের ক্ষরণ বেশী হলে তৈরি হয় দৈত্যাকার মানুষ। অস্থি তৈরির কাজ শেষ হওয়ার পর এই হরমোনের ক্ষরণ বেশী হলে তৈরি হয় গরিলার মতো চওড়া হাড় যুক্ত মানুষের। এই বৈশিষ্ঠ্যকে বলে অক্রোমেগালি। গ্রোথ হরমোনের ক্ষরণ খুব কম হলে তৈরি হয় বামনাকৃতির মানুষ।
পিতা-মাতা লম্বা বা বেঁটে হলে সাধারণত সন্তানেরা লম্বা বা বেঁটে হয়ে থাকে। কারণ পিতা-মাতার ক্রোমোজোম এর প্রভাবের ফলে সন্তানদের হরমোন ক্ষরণ কম বা বেশী হয়ে থাকে ফলে সন্তানেরা পিতা ও মাতার মত লম্বা বা বেঁটে হয়ে থাকে। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে বেরানো থাইরক্সিন ও ট্রাই আয়োডা থাইরোনিন হরমোন দুটির উপর নির্ভর করেও মানুষ লম্বা বা বেঁটে হওয়া নির্ভর করে।
সাধারণত ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা লম্বায় খাটো হয়ে থাকে। স্ত্রী প্রজনন হরমোন ইস্ট্রোজেন বয়ঃসন্ধির সময়ে গ্রোথ হরমোন ক্ষরণের হার কমিয়ে দেয়। তাই মেয়েরা লম্বা কম হয়। আর পুরুষ প্রজনন হরমোন অন্ড্রোজেন লম্বা হতে সাহায্য করে নির্দিষ্ট কিছু সময় পর্যন্ত। সেজন্য ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় সাধারণত লম্বা বেশী হয়ে থাকে।
কোন মন্তব্য নেই