পরিচয়পত্র ও সনদপত্রের প্রচলনের ইতিহাস
আধুনিক জগতে
পরিচয়পত্র এবং সনদপত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। নিরাপত্তা বা পরিচয় সনাক্ত
করনের জন্য আইডি কার্ড ব্যবহার করা হয়। স্কুল-কলেজ, ব্যাংক-বীমা
এমনকি জাতীয় পরিচয়ের ক্ষেত্রেও পরিচয় পত্র ব্যবহার করা হয়। আজকাল পরিচয়পত্র বহন
অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে দেখা দিয়েছে। গলায় পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে কর্মময় দিন অতিবাহিত
করা বর্তমানে নতুন একটি নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। আবার, জ্ঞান অর্জনের
স্বীকৃতি হিসেবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের প্রচলন আছে প্রত্যেক দেশে। কিন্তু
আমরা কেউ কী কখনো ভেবে দেখেছি, এই পরিচয়পত্র বা
সনদপত্রের ব্যবহার প্রথম কবে, কোথায় হয়েছিল?
পরিচয়পত্রের ইতিহাস:
খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ বছর আগে অসিরিয়ান সরকার তার দেশের নাগরিকদের জন্য পরিচয়পত্র চালু করেছিল। সর্বপ্রথম খড়িমাটি দিয়ে পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়েছিল। খড়িমাটির বিস্কুট আকৃতির সেই পরিচয়পত্র তাঁদের নিজস্ব পদ্ধতিতে তৈরি করা হতো এবং তাতে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যগুলো লিখে রাখা হতো। আসিরিয়ান সরকারের পক্ষে নাগরিকদের জন্য পরিচয়পত্র চালু করা একটি স্বাভাবিক ব্যাপার হিসেবে ধরে নেয়া যায়। কারণ, তারা ছিল খুবই পদ্ধতিগতভাবে সংগঠিত ও নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হরণে সিদ্ধহস্ত।
আসিরিয়ানদের
সর্বপ্রথম পরিচয়পত্র চালু করার পর তার প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করে পরিচয়পত্রের
জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়তে থাকে। এক দেশ হতে আরেক দেশে আইডি কার্ডের প্রচলন শুরু হতে
থাকে। যার সর্বশেষ অবস্থান বর্তমানের আইডি কার্ড বা পরিচয় পত্র।
সনদপত্রের ইতিহাস:
জ্ঞান অর্জনের
স্বীকৃতি হিসেবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের প্রচলন আছে প্রত্যেক দেশে। সনদপত্রের
সর্বপ্রথম প্রচলন হয় চীনে। খ্রিষ্টপূর্ব ১৭৮ শতকে চীনের হান বংশের রাজারা তাদের
রাষ্ট্রের শিক্ষিত মানুষের হাতে ‘যোগ্য ও অসাধারণ’ শিরোনামে সনদপত্র তুলে দেওয়া শুরু করে। এই সনদপত্রগুলো
কেবল তাঁদেরই দেওয়া হতো, যাঁরা জ্ঞানে-গুণে
অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতেন। একই সময়ে শিক্ষাগত যোগ্যতার বিভিন্ন পর্যায়ের
উদ্ভব হয়। রাজারা একেকটি পর্যায় অতিক্রম করার পর প্রতিভাবানদের হাতে একেক মর্যাদার
সনদপত্র তুলে দিতেন।
ব্যাপারটি অনেকটা বর্তমানের স্নাতক, স্নাতকোত্তর সনদের মতোই ছিল। এক এক করে একেকটি পর্যায় অতিক্রম করার পরেই প্রতিভাবানদের সেই সনদগুলো দেওয়া হতো। সময়ের স্রোত বেয়ে সেটা আজও টিকে আছে দেশে দেশে।
কোন মন্তব্য নেই