একুশ শতকের বিশ্বের বিস্ময় বুর্জ খলিফা
ধনী
ব্যক্তি বা রাষ্ট্র যেটির
কথাই বলুন না কেন, আকাশ
চুম্বী অট্টালিকা তৈরি করা তাদের শখ। বর্তমান বিশ্বে ধনী রাষ্ট্র সমূহের মাঝে আকাশ চুম্বী অট্টালিকা তৈরি করার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। পেট্রোনাস টাওয়ার, টুইনস টাওয়ার, তাইপে টাওয়ারের পর তৈরি করা
হয়েছে আরও একটি আকাশচুম্বী অট্টালিকা। আর এটিই হচ্ছে
বর্তমান বিশ্বের সবোর্চ্চ ভবন। এটি নির্মিত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী রাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে। একুশ শতকের বিস্ময় বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফা উদ্বোধন করা হয় ৪ জানুয়ারি
২০১০। উদ্বোধন করেন দুবাইর শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম। স্থাপত্য
শিল্পের অতুলনীয় নিদর্শন দুবাইয়ের এ টাওয়ারটি বর্তমানে
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারও।
বিস্ময়কর এই ভবনের অবস্থান দোহা স্ট্রিট, শেখ জায়েদ সড়ক, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই স্থাপনার স্থপতি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের অড্রিয়ান স্মিথ। বুর্জ আল খলিফার নির্মাণকাজ শুরু হয় ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৪ এবং কাজ শেষ হয় ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে। আকাশচুম্বী এই ভবনের উচ্চতা ২৭১৭ ফুট বা ৮২৮ মিটার। আর এর ওজন ৫ লাখ টন। ৫.৬৭ মিলিয়ন বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট এই ভবনটি নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভবনটির মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ৫৯ মাইল বা ৯৫ কিলোমিটার দূর থেকে এ ভবনটি খালি চোখে দেখা যায়।
টাওয়ারটি
নির্মাণে লেগেছে ৩ লাখ ৩০
হাজার কিউবিক মিটার কংক্রিট, ৩৯ হাজার মিটার
স্টিল, ১ লাখ ৩
হাজার বর্গমিটার কাচ এবং ১ লাখ ৫৫
হাজার বর্গমিটার স্টেইনলেস স্টিল। এতে রয়েছে ১৮৫ মিলিয়ন বর্গফুটের আবাসিক এলাকা, ৩ লাখ বর্গফুট
আয়তনের অফিস এলাকা, ১ হাজার ৪৪টি
এপার্টমেন্ট, ৬৬টি ডাবল ডেকার এলিভেটর। ২ হাজার ৭১৭
ফুট বা ৮২৮ মিটার
ভবনটি এখন সবচেয়ে বেশি তলাবিশিষ্ট ভবনও। যার মোট তলার সংখ্যা ২১১ টি। যার মধ্যে ১৬৩ টি বাস যোগ্য,
৪৬টি কারিগরির জন্য এবং নিচে ২টি গাড়ী পার্কিংয়ের জন্য।
এতে
রয়েছে পৃথিবীর দ্রুততম এলিভেটর। যা সেকেন্ডে ১৮
মিটার অর্থাৎ ঘণ্টায় ৪০ মাইল দ্রুত
গতিতে চলে। এর ১০৮ তলা
পর্যন্ত রয়েছে বিশ্বের উচ্চতম আবাসিক এলাকা, ১৫৮ তলায় রয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানের মসজিদ। ৭৬ তলায় রয়েছে
বিশ্বের উচ্চতম স্থানের সুইমিংপুল, ৪৪২ মিটার উচ্চতম স্থানে রয়েছে সবোর্চ্চ পর্যবেক্ষণ ডেক বা টাওয়ার।
এই অট্টালিকার রয়েছে আত্মহত্যার ও বিশ্ব রেকর্ড। বিল্ডিংটি চালু হবার ১৮ মাস পর ১০ মে ২০১১ তারিখ জনৈক ব্যক্তি এই অট্টালিকার ১৪৬ তলা থেকে লাফিয়ে পড়েন। লাফিয়ে পড়ার পর লোকটি ৩৮ তলায় এসে পড়ে নিহত হন। লোকটি তার কর্মস্থলের সাথে রাগারাগি করে আত্মহত্যা করেন। এটিই হচ্ছে সবচেয়ে উঁচু স্থান থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করার রেকর্ড।
৩১
ডিসেম্বর ২০১০ তারিখ মধ্যরাতে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে এই অট্টালিকায় বর্ণিল
আতশবাজি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। যা রাতের আকাশকে
সাজিয়েছিল স্বপ্নপুরীর বর্ণিল সাজে। হাজার হাজার মানুষ সেদিন প্রতক্ষ্য করেছিল সবোর্চ্চ ভবন থেকে আতশবাজির বর্ণিল বিচ্ছুরন।
কোন মন্তব্য নেই