আজব এক হস্তী মানবের দেশ মিসিসিপি
বিশ্বব্যাপী
মোটা মানুষের সংখ্যা এখন অনেক। খাদ্যাভ্যাস, অলসতা এবং বিভিন্ন কারণে স্থূলতার সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশেও এখন ইয়া মোটা মোটা মানুষ দেখা যায়। তবে সংখ্যায় তা খুব বেশি
নয়। আর সারা বিশ্বের
কথা যদি বলেন তাহলে বিশ্বব্যাপী মোটা মানুষের সংখ্যা এখন অনেক বেশী। তবে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। কিন্তু কোথাও যদি দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষই মোটা, তাহলে কি অবাক হবেন
না? তারা কিন্তু শুধু মোটা নয় ইয়া মোটা।
হ্যাঁ, এমনই একটি এলাকা আছে পৃথিবীতে যেখানের মানুষজন অধিকাংশই বিশাল বিশাল মোটা।
মিসিসিপি উত্তর আমেরিকার একটি দ্বীপ। আর এই এলাকাটাই হচ্ছে সেই মোটা মোটা মানুষদের আবাসস্থল। যাকে বলা হয় হস্তী মানবের দেশ। এই দ্বীপের যেখানেই যাবেন বা যেদিকেই তাকাবেন দেখবেন মোটা মোটা মানুষের ভিড়। তবে তারা কিন্তু স্বাভাবিক মোটা নয় একেবারে অস্বাভাবিক ইয়া মোটা। একেকজনের ওজন ২২০-৩০০ কেজি বা তারও বেশি। এই দ্বীপের মানুষের সবার গায়ের রং কালো। এরা অতিথিপরায়ণ এবং ব্লুস মিউজিকের জন্য বিখ্যাত। এই দ্বীপের শিশু-কিশোর ও যুব সমাজ থেকে শুরু করে সবাই ভুগছে স্থূলতার মতো একটি মারাত্মক সমস্যায়।
দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে তাদের এই সমস্যা। ১৯৯৪ সালে মিসিসিপিতে মোটা হওয়ার হার ছিল শতকরা ২২.৯ ভাগ। ২০০৪ সালে এটা বেড়ে দাড়ায় ৩২.২ ভাগ, আর ২০০৬ সালে এটি হয় ৩৪.৩ ভাগের কোটায়। ২০১১ সালে এটি পরিণত হয়েছে মহামারিতে। বিশ্বে স্থূলতার দিক দিয়ে মিসিসিপি প্রথম শহর। বিশ্বের অন্যদেশ ও শহরের তুলনায় মিসিসিপির লোকজন শতকরা ৩০.৬ ভাগ মোটা। কেন এই এলাকার মানুষ এত মোটা তা খুঁজে বের করতে চালানো হয়েছে একটি বিশেষ জরিপ। কারণ হিসেবে জানা গেছে কয়েকটি তথ্য। প্রথম কারণ হিসেবে জানা যায়, গত ২৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে টাটকা ফল ও শাকসবজির দাম বেড়ে গেলেও কমে গেছে চর্বিযুক্ত খাবারের দাম। এর ফলে এখানকার লোকজন ফলফলারি খাওয়া কমিয়ে দিয়ে খাওয়া শুরু করেছে সস্তা চর্বি জাতীয় খাবার। আর এই খাবারে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি, যা মেদ বাড়াতে সহায়তা করে।
নিগ্রোদের শহর মিসিসিপিতে সামাজিক জীবনধারা অত্যন্ত কষ্টকর এবং ব্যয়বহুল ফলে তারা চর্বি বা তেল যুক্ত সস্তা খাবারের প্রতি দিন দিন আগ্রহী করে তুলছে। মিসিসিপির একজন ডাক্তার জানান, মানুষদের দিনদিন ওজন বাড়ছে। এতে তারা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তারা এখন কাজকর্ম ঠিকমতো করতে পারে না। তারা রোগের কারণে বাধ্য হচ্ছে প্রতিদিন প্রচুর ওষুধ গ্রহণ করতে।
স্থূলতার
আরও কারণ হচ্ছে, এখানের স্থূলদেহীরা রাস্তায় জগিং করতে বা ব্যায়াম করতে
মোটেও পছন্দ করে না। তারা ভালবাসে সবসময় শুয়ে-বসে থাকতে বা ঘরে বসে
টিভি দেখতে।
কোন মন্তব্য নেই