অবিশ্বাস্য ম্যারাথন শেষেই মা !
কথায় বলে “কালে কালে আর কত কি যে দেখবো” প্রবাদটি সাধারণত আমাদের দাদী-নানীরা বলে থাকেন। তবে প্রবাদটি কিন্তু তারা বৃথাই বলেন না। বিশ্বের জন্মলগ্ন থেকে এমন আজব ও অদ্ভুত ঘটনার সব জন্ম দিয়ে আসছে মানুষ যে দাদী-নানীদের এই প্রবাদ সত্যিই যুক্তিযুক্ত। যেমন ধরুন আম্বার মিলারের কথা। আপনি কি চিনতে পেরেছেন তাকে? যদি না চিনতে পারেন তবে আপনাকে মনে করিয়ে দেয় তিনি হচ্ছেন বিখ্যাত মহিলা দৌড়বিদ।
তার সম্পর্কে আলোচনা করতে হলে সাধারণত দৌড়ের বিষয়ে আলোচনা করতে হয় কিন্তু তিনি দৌড়ের সাথে এমন একটি কাজ করেছেন যা শুনলে আপনিও বলবেন “কালে কালে আর কত কি যে দেখবো”।আম্বার মিলার গর্ভে প্রায় ১০ মাস বয়সী সন্তান নিয়ে ম্যারাথনে দৌড়িয়েছেন। এ-ও কী সম্ভব? অবিশ্বাস্য এই ঘটনার সত্যিই জন্মই দিয়েছেন আম্বার মিলার। যুক্তরাষ্ট্রের ২৭ বছর বয়সী এই নারী যে শুধু প্রতিযোগিতায় দৌড়িয়েছেন তা কিন্তু নয়, ম্যারাথন শেষ করেই জন্ম দিয়েছেন নিজের দ্বিতীয় সন্তান!
ক্রীড়াঙ্গনে
কত বিচিত্র ঘটনাই না ঘটে। কিন্তু
দুঃসাহসী আম্বার মিলার একটু বেশিই বিস্ময়কর ঘটনার জন্ম দিয়ে ঠাঁই করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। বিশ্বকে অবিশ্বাস্য এ ঘটনার সাক্ষী
তিনি বানিয়েছেন ০৯ অক্টোবর ২০১১
তারিখ রবিবার। শিকাগো ম্যারাথনে তিনি গর্ভে সন্তান নিয়ে দৌড়িয়েছেন ২৬.২ মাইল বা
৪২.১৯৫ কি.মি.। সকালে
যখন দৌড় শুরু করেন, তাঁর গর্ভের সন্তানের বয়স তখন ৩৯ সপ্তাহ। এই
দুঃসাহসিক কাজ তিনি করেছেন চিকিৎসকের সম্মতিতেই। তার দৌড় শেষের সাত ঘণ্টা পর তিনি হয়েছেন
৭ পাউন্ড ওজনের গর্বিত কন্যা সন্তানের মা।
প্রথমে
অবশ্য মিলার পরিকল্পনা করেছিলেন প্রতিযোগিতার অর্ধেকটা দৌড়াবেন। কিন্তু অসম্ভবকে সম্ভব করে মিলার দৌড় শেষ করেছেন। তবে শেষের দিকে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। বুঝতে পেরেছিলেন, কিছু একটা হতে যাচ্ছে। দৌড় শেষে রাতে স্বামী জোকে নিয়ে একসঙ্গে ডিনার সারেন। তার পরই সরাসরি হাসপাতালে। রাত ১০টা ২৯ মিনিটে প্রসব
করেন ফুটফুটে কন্যা সন্তান। নবজাতক মেয়ের নাম রাখা হয়েছে জুন আওদ্রা। বিস্ময়কর হলেও মিলারের জন্য এটা নতুন ঘটনা নয়। প্রথম সন্তানের জন্মের আগেও চার সপ্তাহের গর্ভাবস্থায় নেমেছিলেন ট্র্যাকে।
শিকাগো
ম্যারাথন ছিল তাঁর অষ্টম ম্যারাথন। মিলার দৌড়িয়েছেন একটু ধীরগতিতেই। দৌড় শেষ করেছেন নিজের সেরা সময়ের চেয়ে তিন ঘণ্টা বেশি সময় নিয়ে। হাসপাতালে মা-মেয়ে দুজনেই
সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ‘ম্যারাথন-মম’ মিলার তার দৌড় সম্পর্কে বলেছেন, “এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘতম দিন, এখন আমরা উচ্ছ্বসিত কিন্তু ক্লান্ত”। মিলারের এই
রেকর্ড বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সম্ভবত এমন বিরল রেকর্ড পৃথিবীতে এটাই প্রথম।
কোন মন্তব্য নেই