Header Ads

তিন বছর ধরে স্ত্রীর রক্ত পান করা স্বামী

আজব এই পৃথিবীতে কত ধরনের যে ঘটনা ঘটে তার কোন হিসাব নেই। এক একটি ঘটনা শুনলে আশ্চর্যান্বিত হতে হয়। এই ধরুন স্ত্রীর রক্ত খাওয়ার ঘটনাটি। রক্ত নিয়ে হলিউডে বা বিশ্ব জুড়ে সিনেমা জগতে তৈরি হয়েছে অসংখ্য সিনেমা। মানুষের গায়ের লোম খাড়া করা সেই সমস্ত সিনেমা দেখে দর্শকরা সত্যিই ভীত হয়ে থাকেন। রক্ত এমনই একটি বিষয় যা যে কারও মনে অল্পতেই ভয় ধরিয়ে দিতে পারে। আমাদের আজকের বিষয়টিও রক্তকে নিয়ে। রক্ত নিয়ে বিভিন্ন সিনেমা তৈরি হলেও রক্ত নিয়ে এটি কোনও মিথ্যা, কাল্পনিক বা সিনেমার কাহিনী নয়। এটি একটি সত্য ঘটনা।

ভারতের মধ্য প্রদেশের দামো জেলার শিকারাপুরা গ্রামের মহেষ নামক এক পাষণ্ড স্বামী তার স্ত্রীর রক্ত পান করেছে টানা তিন বছর ধরে। বিষয়টি কেউ জানতো না, কিন্তু এক পর্যায় তার স্ত্রী সহ্য না করতে পেরে নিজেই ফাঁস করেছে এই অবিশ্বাস্য ঘটনা। মধ্য প্রদেশের ২২ বছর বয়সী মহেষের স্ত্রী দীপা আরিবার এই ঘটনাটি জানিয়েছেন পুলিশকে। দীপা পুলিশকে জানাই যে, তার স্বামী মহেষ বিগত তিন বছর ধরে তার শরীরের রক্ত পান করে এসেছে। মহেষ প্রতিদিন সিরিঞ্জ দিয়ে তার স্ত্রীর বাহু থেকে রক্ত বের করে একটি গ্লাসে রাখতো এরপর সে এই রক্ত তৃপ্তির সাথে পান করতো। মহেষ এই ভাবে প্রতিদিন তার স্ত্রীর শরীর থেকে রক্ত নিত এবং দীপাকে হুমকি দিত সে যেন এই ঘটনা কোনও দিন কাউকে না বলে। যদি বলে তাহলে তাকে হত্যা করে ফেলবে।

২০০৭ সালে দীপার সঙ্গে কৃষি শ্রমিক মহেষের বিবাহ হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে মহেষ তার স্ত্রীর শিরা থেকে প্রতিদিন রক্ত নেয়া শুরু করে। রক্ত নিয়ে সে মজা করে পান করতো। মহেষের ধারনা ছিল সে প্রতিদিন মনুষ্য রক্ত পান করায় তার দেবতার দোয়ায় সে বলবান হচ্ছে। দীপা গর্ভবতী হলেও সে তার শরীর থেকে রক্ত নেয়া বন্ধ করেনি। তার ধারনা ছিল সে যদি রক্ত নেয়া বন্ধ করে তাহলে তার দেবতা তার উপর রুষ্ট হবে। দীর্ঘ দিন দীপার শরীর থকে রক্ত নিয়ে আসলেও দীপা তার স্বামীর ভয়ে কোনও দিন প্রতিবাদ করেনি। তবে তাদের পুত্র সন্তান প্রসবের পর থেকে দীপা তার স্বামীর এই অমানবিক কাজের প্রতিবাদ করতো। তার প্রতিবাদের ফলে মহেষ তাকে মারধর করতো।

দীপা পুলিশকে জানায়, তার শরীর থেকে প্রতিদিন রক্ত নেয়ার ফলে তার মাথা ঘুরতো বমি বমি ভাব হতো। প্রতিবাদের পরও মহেষ যখন তার কথা না শুনে উল্টো তাকে মারধর করতো তখন দীপা তার কোলের সন্তানকে সাথে নিয়ে ২০১১ সালের জুলাই মাসে বাপের বাড়ি পালিয়ে আসে। পিতার এখানে চলে আসার পর সে পুলিশের কাছে তার সব নির্যাতনের ঘটনা খুলে বলে। তার ঘটনা শুনে পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকার করলেও পরে গ্রামবাসীর চাপে পড়ে মামলা নিতে বাধ্য হয়।

ভারত উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হলেও সেখানে দীপার মতো মর্মান্তিক ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে। কুসংস্কার, অপসংস্কৃতি ভ্রান্ত ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে ভারতে নারীরা নানা প্রকারের নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। তারা ধর্মীয় গোঁড়ামিতে এতটাই মগ্ন যে, মাঝে মাঝে তারা মনুষ্যত্বের স্বাভাবিক জ্ঞানটুকুও হারিয়ে ফেলে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.