বিরল ৩৪ আঙ্গুলের বাচ্চা !
বিচিত্রময় এই পৃথিবীতে বিচিত্র সব কিছুই সম্ভব। মহান সৃষ্টিকর্তা তার অপার মহিমা দিয়ে পৃথিবীতে মানুষ প্রেরণ করে থাকেন। পৃথিবীতে মানুষ তার স্বাভাবিক অবয়ব ও আকৃতি নিয়ে জন্ম গ্রহণ করার কথা কিন্তু পৃথিবীর আশ্চর্যময়তায় মানুষও অনেক সময় বিচিত্র কিছু অবয়ব নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে। শারীরিক অবয়বের পার্থক্যের মধ্যে কারও শরীরের কোনও অংশ কম-বেশী বা বিকলাঙ্গ থাকে। শরীরের এই অস্বাভাবিক বিকৃতির কারণে অনেকে আবার রেকর্ড বুকেও নাম উঠিয়ে ফেলেন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় ভারতের ৩৪ আঙ্গুল বিশিষ্ট বাচ্চার কথা। তার এই শারীরিক বিকৃতির কারণে সবচেয়ে বেশী আঙ্গুল ধারী ব্যক্তি হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুকে তার নাম উঠেছে।
আক্সাত
সাক্সেনা নামের এই শিশুটির জন্ম
ভারতের উত্তর প্রদেশের বেরিয়ালি জেলায় বছর দুয়েক আগে। জন্মের সময় তার প্রতি হাতে ৭টি এবং প্রতি পায়ে ১০টি করে মোট ৩৪টি আঙ্গুল ছিল। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের মুখপাত্র এ খবর নিশ্চিত
করেছেন। তবে এত আঙ্গুলের মাঝেও
সাক্সেনার বৃদ্ধাঙ্গুলি খুঁজে পাওয়া যায় নি। অর্থাৎ হাতে ৭টি করে আঙ্গুল থাকলেও তার বৃদ্ধাঙ্গুলি ছিল না। শিশুটির মায়ের নাম অমিত সাক্সেনা। তিনি জানান, প্রথম সন্তান হিসেবে আমার সন্তানকে দেখে আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু তার ৩৪টি আঙ্গুল দেখে আমি রীতিমতো বিস্মিত হয়ে গেলাম।
চিকিৎসা
বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় পলিড্যাক্টাইলি। এটা এক
ধরনের জেনেটিক ডিজঅর্ডার। যা এক প্রজন্ম
থেকে অন্য প্রজন্মে সঞ্চারিত হতে পারে। এ প্রসঙ্গে ভারতের
উত্তর প্রদেশের ডাক্তার পারুল গুপ্ত বলেছেন, অতিরিক্ত আঙুলের জন্য পলিড্যাক্টিলিক নামে এক ধরনের রোগ
দায়ী। বাচ্চা গর্ভে থাকাকালে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কারণেও এমন হতে পারে। তবে এটি পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। বেশিরভাগ রোগী অপারশেন করে সুস্থ হয়ে ওঠে।
তবে
স্বাভাবিক চিকিৎসায়ও এ রোগ সেরে
যায়। সাক্সেনার মা জানান, তার
এক পারিবারিক বন্ধু জানিয়েছেন যে, তিনি ইন্টারনেটে ৩১ আঙ্গুল বিশিষ্ট
চীনা এক শিশু দেখেছেন।
কিন্তু সাক্সেনা তার থেকেও স্পেশাল। তখন তিনি জানালেন, আমার সন্তান বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছে। প্রথমে আমি মোটেই বুঝতে পারিনি। আমার সন্তান বিশ্ব রেকর্ড করেছে এটা বিশ্বাস করা কঠিন ছিল। কিন্তু পরে আমার ওই বন্ধুটি ও
আমার স্বামী মিলে ইন্টারনেটে সাক্সেনার ডাটা নিবন্ধন করেন। এর আগে এক
চীনা শিশু হাতে ১৫টি ও পায়ে ১৬টি
মোট ৩১ আঙ্গুল নিয়ে
বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল।
ওই
শিশুটির অতিরিক্ত আঙ্গুলগুলো অপারেশনের মাধ্যমে কেটে ফেলে তার আঙ্গুলের সংখ্যা ২০টি করা হয়েছিল। বর্তমানে শল্য চিকিৎসকরা সিরিজ অপারেশন করে সাক্সেনার অতিরিক্ত আঙ্গুলগুলোও কেটে ফেলেছেন। চিকিৎসকরা কেটে ফেলা এ আঙ্গুল দিয়ে
তার বৃদ্ধাঙ্গুলিও নির্মাণ করেছেন।
কোন মন্তব্য নেই