Header Ads

অবিশ্বাস্য দড়ির উপর হেটে নায়াগ্রা পার !

আমরা সাধারণত সার্কাসে দেখে থাকি সাহসী কোনও ব্যক্তির উঁচু দড়ির উপর দিয়ে হেটে যেতে বা দড়ির উপর দিয়ে সাইকেল চালাতে। এরা মূলত দুর্দান্ত সাহস কৌশলের মাধ্যমে এই কাজগুলো করে থাকে। তবে যদি দেখা যায় কেউ বিশাল জলপ্রপাতের উপর দড়ির উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছে তাহলে কেমন লাগবে? নিশ্চয়ই ভয়ে গা শিউরে উঠবে এবং রুদ্ধশ্বাস একটি সময়ের আবির্ভাব ঘটবে এমনটা করা খুব খুবই কঠিন। তবে এই কাজটি যত কঠিন ভয়ানক হোক না কেন সেটি বাস্তবে করে দেখিয়েছেন মার্কিন দড়িবাজ নিক ওয়ালেন্ডা।


গত ১৫ জুন ২০১২ তারিখ শুক্রবার দড়ির ওপর দিয়ে হেঁটে নায়াগ্রা জলপ্রপাত পাড়ি দিয়ে রীতিমত বিশ্বব্যাপী আলোড়নের সৃষ্টি করেছেন এই মার্কিন দড়িবাজ। নায়াগ্রা জলপ্রপাতের উপর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত টানানো পাঁচ সেন্টিমিটার বা দুই ইঞ্চি ব্যাসের দড়ির ওপর দিয়ে খুব কাছ দিয়ে হেঁটে পার হয়েছেন তিনি। নায়াগ্রার উপর দিয়ে এভাবে হেটে যাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। রয়টার্স দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত খবরে কথা জানানো হয়েছে। নিক ওয়ালেন্ডা ঘন কুয়াশা পানির প্রচণ্ড শব্দের মধ্য দিয়ে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের যুক্তরাষ্ট্রের প্রান্ত থেকে কানাডা প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ মিটার বা এক হাজার ৮০০ ফুট দূরত্ব পার হন। এতে তাঁর সময় লাগে ২৫ মিনিট।

১৫০ বছর আগে, ফরাসি দড়িবাজ চার্লস ব্লঁদিন নায়াগ্রা জলপ্রপাতের সামান্য ওপরে টানা এক  ধাতব তারের উপর দিয়ে হেঁটে পার হয়েছিলেন। তবে নিকের মতো স্বগর্জনে ঝাঁপিয়ে পড়তে থাকা জলরাশির এত  কাছ দিয়ে তিনি হেটে যাননি।

নিক ওয়ালেন্ডা জলপ্রপাতের এক প্রান্ত থেকে হাটা শুরু করেন এবং এবং দীর্ঘ ২৫ মিনিট ধরে হেটে তিনি জলপ্রপাতের অপর পাশে পৌঁছান। তিনি যখন তর্জন গর্জনময় জলপ্রপাতের উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন তখন সেখানে উপস্থিত দর্শক টিভির পর্দায় হাজার হাজার দর্শক রুদ্ধশ্বাস নিয়ে সেই সময়গুলো অতিবাহিত করছিল। তিনি নিরাপত্তার জন্য কোমরে একটি দড়ি ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য হাতে একটি লম্বা লাঠি রেখেছিলেন।


এবিসি টেলিভিশন এই দুঃসাহসী অভিযানটি সরাসরি সম্প্রচার করেছিল। দড়ির ওপর দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় টেলিভিশনের উপস্থাপক নিকের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। নিকের অনুভূতিও জানতে চাওয়া হয়েছিল সে সময়। তিনি বলেছিলেন, ঘন কুয়াশার জন্য মাঝেমধ্যেই সব কিছু ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল তার সামনে। একদিকে বাতাস বয়ে যাচ্ছিল, এর মধ্যে আবার কুয়াশা, এতে কিছু সময়ের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। অভিযান শেষে ৩৩ বছর বয়সী নিক ওয়ালেন্ডা বলেছেন, ‘যা দেখেছি, তা অবিশ্বাস্য দৃশ্য। যা ছিল সত্যিই শ্বাসরুদ্ধকর।

এবিসি টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে নিককে তার পরবর্তী লক্ষের কথা জানতে চাওয়া হলে তিনি উত্তরে জানিয়েছেন, প্রথম মানুষ হিসেবে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পাড়ি দিতে চান তিনি। ইতোমধ্যে তিনি অনুমতিও পেয়েছেন। তিনি জানান, ‘আশা করছি, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ওটা পাড়ি দিতেও সফল  হবো।বিশ্বের সবচেয়ে গভীর খাদ গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের এরিজোনা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত। এর প্রস্থ নায়াগ্রা জলপ্রপাতের প্রায় তিন গুন।

নিক ওয়ালেন্ডাফ্লাইং ওয়ালেন্ডাপরিবারে সপ্তম প্রজন্ম। এই পরিবারটি গত কয়েক বছর ধরে মাটি থেকে উঁচুতে টানানো দড়ির ওপরে কসরত দেখিয়ে আসছে। একের পর এক ভয়ংকর বিপদ জনক কাজ তারা মানুষদের দেখিয়ে আসছে। আর তারই সর্বশেষ আয়োজন এই নায়াগ্রা জলপ্রপাত পাড়ি দেওয়া।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.