২৫ বছর বনের বাসিন্দা মাইক ডজ
বন মানুষের কথা আমরা অনেকেই শুনেছি কিন্তু বাস্তবে হয়তো দেখিনি। আদিম যুগে মানুষ যখন সভ্যতার সন্ধান পায়নি তখন মানুষ বনে-জঙ্গলে বসবাস করতো। আবার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় অনেক সন্ন্যাসী বা ধর্ম প্রচারক গন বসবাসের জন্য নিরিবিলি বনকে বেশী পছন্দ করতেন। বর্তমানে অনেকে বিভিন্ন অভিযানের জন্য বনবাস করে থাকেন তবে সেটি হাতে গোনা কয়েক দিনের জন্য।
কিন্তু
আজকের এই আধুনিক বিশ্বে
স্থায়ীভাবে বনবাসের কথা হয়তো কেউ চিন্তাও করতে পারে না। আপনি চিন্তা করতে পারুন আর নাই পারুন
মাইক ডস কিন্তু অসম্ভবকে
সম্ভব করে ছেড়েছে। তিনি আধুনিক এই বিশ্বে জন্ম
নিয়েও একজন বনমানুষ।
মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ওয়াশিংটনের বাসিন্দা মাইক ডজ গত ২৫
বছর ধরে মনুষ্য জগত ত্যাগ করে স্থায়ীভাবে জঙ্গলে বসবাস করছেন। তার আচার-ব্যবহার ও চেহারায় তিনি
বর্তমানে একজন পূর্ণ বনমানুষ।
এখন
থেকে ২৫ বছর আগে
ডজ এই জগত সংসারকে
ত্যাগ করে বনবাসের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তার বনবাসে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয় তিনি এই
মনুষ্য জগতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারতেন না। তিনি সর্বদা ভাবতেন এই মনুষ্য জগতে
তিনি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না। বনবাসে যাওয়ার আগে তারুণ্যে তিনি ছিলেন একজন মার্কিন নৌসেনা এবং সমর বিশেষজ্ঞ। তিনি সর্বদা নিজেকে দার্শনিক এবং শান্তি বাদী হিসেবে পরিচিত করতেন।
তিনি
একজন সমর বিশারদ হলেও তিনি যুদ্ধ-বিগ্রহকে খুবই ঘৃণা করতেন। আর তাই তিনি
শান্তির অন্বেশায় বনবাসের সিদ্ধান্ত নেন। অবশ্য এটি তার বংশগত আকাঙ্ক্ষাও বলা যেতে পারে, কারণ মাইক ডজের দাদাও বনবাসে গিয়েছিলেন এবং তিনি কয়েক দশক একাকী বনে-জঙ্গলে বসবাস করেছিলেন। দাদার বনবাসের কাহিনী শুনে শৈশব থেকেই ডজের মনে বনবাসের আকাঙ্ক্ষা জেগে ছিল।
মাইক
ডজ গত দুই দশক
ধরে একাকী ঘুরে বেড়াচ্ছেন অলিম্পিক উপদ্বীপের গহীন অরণ্য হোহ রেইন ফরেস্টে। বর্তমানে এই জঙ্গলই তার
আবাস স্থল। এই বনের পশু-পাখি, জীব-জন্তু, গাছ-গাছালি এখন তার পরিবারের সাথি। এদের সাথেই তিনি থাকেন মাসের পর মাস বছরের
পর বছর। এই বনের ফল-ফলাদিই এখন তার প্রধান খাদ্য। দীর্ঘ দিন বনে বাস করার ফলে ডজের চেহারাও হয়ে গেছে বনমানুষের মতো। জট পাকানো চুল
আর তাতে জন্মেছে পরগাছা। তার নিজের মাথাটায় যেন একটি জঙ্গল।
নিজের
ইচ্ছায় হোক বা দাদার অনুপ্রেরণায়
হোক আধুনিক মানব সভ্যতা ছেড়ে ডজ এখন পুরোপুরি
বনের মানুষ। বনের জীব জগতই এখন তার আপন। হয়তো সত্যিই সে মনুষ্য জগতের
উপযোগী ছিল না, তাই বনই তার জন্য শ্রেয়।
কোন মন্তব্য নেই